সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৩৮ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১
নতুন সমীক্ষায় তথ্য: জামালগঞ্জ খনিতে কয়লার মজুত ৫৫০ কোটি টন

নতুন সমীক্ষায় তথ্য: জামালগঞ্জ খনিতে কয়লার মজুত ৫৫০ কোটি টন

koylaআমার সুরমা ডটকমএকটি সমীক্ষা কয়লা মজুতের এখন পর্যন্ত জানা তথ্য আমূল বদলে দিয়েছে। এই সমীক্ষা বলছে, জামালগঞ্জ খনিতে কয়লার মজুত (রিসোর্স) প্রায় ৫৫০ কোটি টন। এর আগে পর্যন্ত খনিটিতে ১০০ কোটি টন কয়লা মজুত রয়েছে বলে তথ্য ছিল। জয়পুরহাট জেলার এই কয়লাখনিতে বাণিজ্যিকভাবে তোলার মতো মিথেন গ্যাস আছে কি না, তা নির্ধারণের জন্য এ বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সমীক্ষাটি চালানো হয়। তাতে বাণিজ্যিকভাবে আহরণযোগ্য গ্যাস নেই বলে জানা গেছে। তবে কয়লা মজুতের যে চিত্র পাওয়া গেছে, তাতে দেশে কয়লা মজুতের পরিমাণ আগের চেয়ে প্রায় আড়াই গুণ (৭৫০ কোটি টন) হয়েছে।

প্রতিটি কয়লাখনিতে প্রাকৃতিকভাবেই কম-বেশি মিথেন গ্যাস থাকে। খনিতে কূপ খনন করে সেই গ্যাস তুলে শিল্প, বিদ্যুৎ উৎপাদন কিংবা অন্য কোনো ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। কয়লাখনি থেকে গ্যাস তোলার এই পদ্ধতির নাম ‘কোল বেড মিথেন’, ইংরেজি আদ্যক্ষরে সিবিএম।
সিবিএম প্রকল্পের জন্য করা সমীক্ষায় ‘প্রজেক্ট মনিটরিং কনসালট্যান্ট’ হিসেবে কাজ করেছেন বাপেক্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মতুর্জা আহমেদ ফারুক। জানতে চাইলে তিনি বলেন, জামালগঞ্জ কয়লাক্ষেত্রটির আয়তন আগে নির্ধারিত ছিল ১০ দশমিক ৭ বর্গকিলোমিটার। এই এলাকার ভেতরে ও বাইরে মোট তিনটি কূপ খনন করে তাঁরা ক্ষেত্রটির আকার নির্ধারণ করেছেন প্রায় ৬৪ বর্গকিলোমিটার। মর্তুজা আহমেদ ফারুক বলেন, এছাড়া তাঁরা যে কূপগুলো করেছেন তাতে কয়লাস্তরের পুরুত্বও (স্থানভেদে প্রায় ৪৪ মিটার) পেয়েছেন আগের তুলনায় অনেক বেশি। এভাবে ৬৪ বর্গকিপলোমিটার এলাকাজুড়ে বিভিন্ন সময় করা মোট ১৪টি কূপের তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রায় ৫৫০ কোটি টন কয়লা সেখানে রয়েছে বলে তাঁরা হিসাব করেছেন। তিনি বলেন, জামালগঞ্জ খনিটি প্রায় ১ কিলোমিটার গভীর হলেও সেখান থেকে সুড়ঙ্গ পদ্ধতিতে কয়লা তোলা সম্ভব। সুড়ঙ্গ পদ্ধতিতে কয়লা তোলায় বড়পুকুরিয়ায় যেমন ভূমিধস হয়েছে, জামালগঞ্জে তা হওয়ার আশঙ্কা নেই। কারণ, সেখানে কয়লাস্তরের ওপরের ভূস্তর অত্যন্ত কঠিন মাটির। সেখানে ডুপিটিলা ধরনের কোনো নরম মাটি নেই।
জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেন, নতুন এলাকায় কূপ খনন করে কয়লাস্তরের পুরুত্ব বেশি পাওয়া গেলে তা বেশি কয়লা মজুতের প্রমাণ হিসেবে ধরা যায়। তবে যেহেতু আগের তুলনায় মজুত কয়েক গুণ বেশি বলা হচ্ছে, সেহেতু উত্তোলনযোগ্য মজুত (রিজার্ভ) নির্ধারণের জন্য প্রকল্প নিয়ে নিশ্চিত হওয়া উচিত। বদরুল ইমাম বলেন, জামালগঞ্জ ক্ষেত্রটির আয়তন ৬৪ বর্গকিলোমিটার বিস্তৃত হলে সেখানে মাত্র তিনটি কূপ খনন করে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সেখানে বাণিজ্যিকভাবে উত্তেলনযোগ্য গ্যাস নেই বলে নিশ্চিত হওয়া যায়না। ভূমিকম্প ও অন্যান্য প্রাকৃতিক কারণে সৃষ্ট ফাটল দিয়ে এই পুরো এলাকার গ্যাস বের হয়ে যাওয়াও স্বাভাবিক নয়। তাই এ বিষয়টিও আবার ভেবে দেখা দরকার।
জাতিসংঘের সহায়তাপুষ্ট কয়লা অনুসন্ধান কর্মসূচির আওতায় ১৯৬২ সালে জামালগঞ্জ কয়লাখনি আবিষ্কৃত হয়। দেশে এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত পাঁচটি (বড়পুকুরিয়া, ফুলবাড়ী, দীঘিপাড়া, খালাশপীর ও জামালগঞ্জ) খনিতে এত দিন মোট কয়লা ছিল প্রায় ৩০০ কোটি মেট্রিক টন। এখন তা প্রায় ৭৫০ কোটি টনে দাঁড়িয়েছে।
দেশের অন্য খনিগুলোতে কয়লার অবস্থান যেখানে ১৫০ থেকে ৫০০ মিটার গভীরতার মধ্যে, সেখানে জামালগঞ্জে কয়লার অবস্থান ৬৪০ থেকে ১ হাজার ১৫৮ মিটার গভীরে। এই খনির অভ্যন্তরে তাপও অন্যান্য খনির তুলনায় কিছুটা বেশি।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com